Home / নামের ইতিহাস ও কিংবদন্তী / বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

বাগেরহাট
বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

বাগেরহাট জেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

এক সময় বাগেরহাটের নাম ছিল খলিফাতাবাদ বা প্রতিনিধির শহর। খানজাহান আলী (রঃ) গৌড়ের  সুলতানদের প্রতিনিধি হিসেবে এ অঞ্চল শাসন করতেন। কেউ কেউ মনে করেন, বরিশালের শাসক আঘা বাকের এর নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। কেউবা বলেন, পাঠান জায়গীদার বাকির খাঁ এর নামানুসারে বাগেরহাট হয়েছে। আবার কারো মতে, বাঘ শব্দ হতে বাগেরহাট নাম হয়েছে। জনশ্রুতি আছে খানজাহান আলী (রঃ) এর একটি বাগ(বাগান, ফার্সী শব্দ) বা বাগিচা ছিল। এ বাগ শব্দ হতে বাগেরহাট। কারো মতে, নদীর বাঁকে হাট বসত বিধায় বাঁকেরহাট। বাঁকেরহাট থেকে বাগেরহাট।

বাগেরহাট জেলার উপজেলা সমুহঃ ফকিরহাট, বাগেরহাট সদর, মোল্লাহাট, শরণখোলা, রামপাল, মোড়েলগঞ্জ, কচুয়া, মোংলা, চিতলমারী।

ফকিরহাট উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছুই জানা যায় না তবে জনশ্রুতুতে আছে যে, ফকির মঙ্গল শাহ্ নামে এক আধ্যাতিক মুসলিম সাধক ভৈরব নদীর দক্ষিণ তীরে পুলিশ ষ্টেশনের কাছে তার আস্তানা তৈরী করেন জানা যায় যে, অলৌকিক ঐশ্বরিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এই সাধক পুরষ কালে কালে তার আস্তানাকে কেন্দ্র করে দোকান পাট বসতে থাকে কালক্রমে তা বৃদ্ধি ও প্রসার লাভ করে হাটে রুপান্তরিত হয় ফকিরের আস্তানাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা এই হাট পরবর্তীতে ফকিরহাট নামে পরিচিতি লাভ করে।

মোল্লা হাট  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

বলা হয়ে থাকে, উনিশ শতকের প্রথম দিকে মেহের মোল্লা নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি নদীর তীরে বাস করতেন। কালক্রমে মধুমালী বাজার মেহের মোল্লার নামানুসারে মোল্লাহাট নাম হয়। এছাড়াও বলা হয়ে থাকে, মো্ল্লারকুল নামক বিরাট গ্রামের নাম থেকে থানা সদরের নামকরণ করা হয়। সম্ভবত গ্রামে মুসলমান মোল্লা গোত্রের পরিবারের আধিক্যের জন্য এই নাম হয়।

আরো জানুন: ষাট গম্বুজ মসজিদের নামকরণ ও ঐতিহাসিক বিবরণ

শরণখোলা  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

স্থানীয় কিংবদন্তি থেকে জানা যায়, শরণখোলা নামের উৎপত্তি হয়েছে একটি স্মরণীয় স্থানের নামানুসারে। বিভিন্ন কৃষিজ পন্য ও সুন্দরবনের কাঠ প্রক্রিয়াকরণের নিমিত্তে স্থানটি সুন্দরবনের প্রান্তভাগে গড়ে উঠেছিল। স্মরণীয় এর স্মরণ থেকে এ এলাকা স্মরণখোলা নামে পরিচিত লাভ করে। পরবর্তীতে বানান বিভ্রাটের কারণে ‘শরণখোলা’ লেখা হয়। তবে স্মরণখোলা নামটিও ব্যাপকভাবেও প্রচলিত।

রামপাল  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

লোকমুখে শোনা যায় পাল বংশের রাম নামের একজন লোক প্রথম কুমার নদীর পেড়িখালীর অপর পার্শ্বে বসতি ন্থাপন করে। এবং পরবর্তীতে তার নামে রামপাল এর নামকরণ করা হয়।

মোরেলগঞ্জ  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

ঐতিহ্যবাহী বাগেরহাট জেলার প্রধান ব্যবসায় কেন্দ্র এককালের ছো্ট কলিকাতা নামে খ্যাত এইমোরেলগঞ্জ।

কচুয়া  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

জমিদার কচুরায়ের নাম অনুসারে কচুয়ার নামকরন কচুয়া করা হয়।

মোংলা  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

কথিত আছে, মঙ্গল রাজার নামানুসারে গ্রিক জাহাজের ক্যাপ্টেন মোংলা নাম করণ করেন।

চিতলমারী  উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

এ উপজেলা মধুমতি, চিত্রা ও বলেশ্বর নদীর মিলনস্থলে অবস্থিত। এই নদীতে একসময় প্রচুর চিতল মাছ পাওয়া যেতো। স্থানীয় লোকজন চিতল ধরাকে বলতো চিতল মারা থেকে চিতলমারী নামের উদ্ভব বলে অনেকে মনে করেন।

ষাট গম্বুজ মসজিদ নামকরণঃ 

ফার্সী ভাষায় স্তম্ভ বা খুঁটি বা পিলার কে গম্বুজ বলে।  কেউ কেউ অনুমান করেন যে মসজিদের অভ্যন্তরে যে ৬০টি স্তম্ভ বা পিলার আছে, তা থেকেই ৬০ গম্বুজ নামের উৎপত্তি। আবার কেউ বলেন যে, মসজিদের ওপর ‘সাত’ সারি গম্বুজ থাকার দরুন ‘সাত’ থেকে ষাটগম্বুজ নামকরণ হয়েছে। আবার অনেকে বলেন যে, সমতল কোন ছাদ নেই গম্বুজ বিশিষ্ট আর্চের ছাদ আছে। তাই ছাদ থেকে রূপান্তর হয়ে ‘ষাট’ হয়েছে। আর এ কারণেই এই মসজিদকে ষাট গম্বুজ মসজিদ হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়।

তথ্য সুত্রঃ জেলা তথ্য বাতায়ন,  প্রত্নতত্ন বিভাগ ও পর্য টন কর্পোরেশন ওয়েবসাইট ও দৈনিক সংগ্রাম (অনলাইন)।

About Sabuj Vumi Editor

Check Also

ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

ঝিনাইদহ জেলার নামকরণ ইতিহাস: জনশ্রুতি আছে প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর পশ্চিম দিকে নবগঙ্গাঁ নদীর ধারে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Flag Counter