গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণঃ

গোপালগঞ্জ জেলার নামকরণঃ

১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের সময়ে একজন উচ্চপদস্থ ব্রিটিশ কর্মকর্তাকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাচিয়েছিলেন রাণী রাসমণি (১৮৬১ খ্রি:)। এই মহৎ কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি লাভ করেন মকিমপুর পরগণার জমিদারি।  রাণী রাসমণি জেলে সম্প্রদায়ের মেয়ে।  জেলে বসতি সম্পন্ন এই এলাকার জমিদারি পেয়ে তিনি খুব খুশি হন। তিনি থাকতেন কোলকাতার করপোরেশন স্ট্রিটে। জমিদারি তদারকি করতেন তার নায়েব শ্রীরজনীকান্ত ঘোষ।  খাটরা এলাকার জনগণ রাণী রাসমণিকে নিজেদের লোক মনে করে খুব শ্রদ্ধা করতেন।  জমিদারি পাবার কিছুদিন পরে রাণীর একটি নাতির জন্ম হলে তার নাম রাখা হয় নবগোপাল।  খাটরা এলাকার লোকজন রাণী রাসমণির প্রতি শ্রদ্ধাবশত মকিমপুর পরগণার খাটরা মৌজায় অবস্থিত রাজগঞ্জ বাজারের নাম বদল করে তার নাতি নবগোপালের নামানুসারে রাখতে চান।  নবগোপালের ‘গোপাল’ আর রাজগঞ্জের ‘গঞ্জ’ মিলে নতুন নাম হলো ‘গোপালগঞ্জ’ ।

গোপালগঞ্জ জেলার উপজেলা সমুহঃ

গোপালগঞ্জ সদর, কাশিয়ানী, টুংগীপাড়া, কোটালীপাড়া, মুকসুদপুর।

কাশিয়ানী উপজেলার নামকরণ ইতিহাস

নওয়াব আলীবর্দি খাঁর আমলে এই গ্রামের জমিদার ছিলেন বাবু দর্পনারায়ণ সেন। নিজ গ্রামে তিনি স্থাপন করেছিলেন কাশীনাথ দেবের ৫টি মূর্তি সহ ৫টি সুদৃশ্য মন্দির। কাশীনাথ দেবের নামানুসারে দর্পনারায়ণ সেনের গ্রামটির নাম হয়ে যায় কাশিয়ানী। অন্যমতে শোনা যায় যে, এ অঞ্চলে পূর্বে প্রচুর কাশফুল হতো, এজন্য এ উপজেলার নাম হযেছে কাশিয়ানী।

টুংগীপাড়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

টুংগীপাড়া নামে একটি মৌজার নাম থেকে উপজেলার নাম হয় টুংগীপাড়া। এর নামকরণ সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

কোটালীপাড়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

ভটিয়াপাড়া ও ফুকরা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান, ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ী সমধিক পরিচিত তীর্থস্থান। ১৯০৮ সালে মুকসুদপুরকে ভেঙ্গে কাশিয়ানী একটি সতন্ত্র থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৩ সালে কাশিয়ানী মানউন্নিত থানায় রুপান্তরিত হয়। এ প্রাচীরের রক্ষক বা কর্মকর্তাকে বলা হতো ‘কোটপাল’।  এ থেকে কোটালীপাড়া নামের উৎপত্তি। তাছাড়া নিম্নোক্তভাবে কোটালীপাড়া নামের উৎপত্তি হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।

        Kot means  Durga

        Ali m means wall

        Para means inhabitants

‘কোটাল’ ও ‘পাড়া’ শব্দ দু’টি একত্রিত হয়ে কোটালীপাড়া শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে।  আর এখানে ‘কোটাল’ শব্দের অর্থ ‘যোদ্ধা’ বা ‘নগররক্ষক’ এবং ‘পাড়া’ শব্দের অর্থ বসতি। অর্থাৎ ‘যোদ্ধা’ বা নগররক্ষকদের বসতি। শব্দের বিচারে বলতে গেলে এই অঞ্চলে যোদ্ধা বা নগররক্ষকদের বসতি গড়ে ওঠার কারণে এ অঞ্চলের নামকরণ করা হয় কোটালীপাড়া।

মুকসুদপুর উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

জানা যায়, মকসুদ আলী নামে এক বিখ্যাত ব্যক্তি এখানে বসবাস করতেন। এই মকসুদ আলীর নাম থেকে মুকসুদপুর নামের উৎপত্তি।

গোপালগঞ্জ জেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

জালালাবাদ,  বৌলতলী, শুকতাইল, চন্দ্রদিঘলিয়া,  গোপীনাথপুর, পাইককান্দি, উরফি, লতিফপুর,

সাতপাড়, সাহাপুর, হরিদাসপুর, উলপুর, নিজড়া, করপাড়া, দুর্গাপুর, কাজুলিয়া,  কাঠি, মাঝিগাতী, রঘুনাথপুর, গোবরা, বোড়াশী

 কাশিয়ানী উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

 মহেশপুর, কাশিয়ানী, সাজাইল, পারুলীয়া, মাহমুদপুর, রাতইল, ওড়াকান্দি, বেথুড়ি, রাজপাট, ফুকরা, পুইশুর, নিজামকান্দি, সিংগা, হাতিয়ারা

টুংগীপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

কুশলি, বর্ণি, গোপালপুর, পাটগাতি, ডুমুরিয়া

কোটালীপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

কলাবাড়ীর, সাদ্দুল্লাপুর, রামশীল, বান্দাবাড়ী, রাধাগঞ্জ, কুশলা, হিরণ, ঘাঘর, আমতলী, শুয়াগ্রাম

পিঞ্জরী, কান্দি

মুকসুদপুর  উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ

পশারগাতি, গোবিন্দপুর, খান্দারপাড়, বহুগ্রাম, বাঁশবাড়িয়া, ভাবড়াশুর, মহারাজপুর, বাটিকামারী, দিগনগর, রাঘদী, গোহালা, মোচনা,উজানী, কাশালিয়া, ননীক্ষীর, জলিরপাড়,

About Sabuj Vumi Editor

Check Also

সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরন ইতিহাস

সাতক্ষীরা জেলার নামকরন ইতিহাস : সাতক্ষীরা জেলার নামকরণ প্রসঙ্গে কয়েকটি মত প্রচলিত আছে । এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *