কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

কক্সবাজার জেলার নামকরণ ইতিহাস :

আধুনিক কক্সবাজারের নামকরণ করা হয়েছে প্রখ্যাত বিট্রিশ নৌ-অফিসার ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স এর নামানুসারে। এর প্রাচীন নাম ছিল পালংকী। একসময় এটি প্যানোয়া নামে পরিচিত ছিল। প্যানোয়া শব্দটির অর্থ ‘হলুদ ফুল’। অতীতে কক্সবাজারের আশপাশের এলাকাগুলো এই হলুদ ফুলে ঝকমক করত।

কক্সবাজার উপজেলাসমূহ: চকোরিয়া,পেকুয়া,কুতুবদিয়া,মহেশখালী,রামু,উখিয়া,টেকনাফ ঈদগাঁও

চকোরিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

‘চকরিয়া’ নামকরণের একাধিক জনশ্রুতি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাতামুহুরী নদীর চারটি বাক থেকে বাকচতুষ্টয় বা চক্রবাক, কারো মতে আকাশে প্রচুর চকুরী পাখির আনাগোনা থেকে চকরিয়া নামকরণ হয়েছে। ঐতিহাসিক ত্রিপুরা রাজাদের “রাজমালা” গ্রন্থে “চাকরোয়া” নামের একটি গ্রামের উল্লেখ আছে। এই চাকরোয়া থেকেই চকোরিয়া নামের উৎপত্তির প্রমাণ বেশী মিলে।

পেকুয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

এই উপজেলা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় না। পূর্বে চকোরিয়া উপজেলায় পেকুয়া নামে একটি ইউনিয়ন ছিল। এই ইউনিয়নকে উপজেলায় উন্নীত করা হলে ইউনিয়নের নামেই উপজেলার নামকরণ করা হয় পেকুয়া।

আরো জানুন:  বাংলাদেশের ৬৪ জেলা উপজেলা সহ বিভিন্ন স্থানের নামের ইতিহাস

কুতুবদিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

নির্যাতিত মুসলমানেরা কুতুবুদ্দীনের প্রতি শ্রদ্ধান্তরে কুতুবুদ্দীনের নামানুসারে এ দ্বীপের নামকরণ করেন কুতুবুদ্দীনের দিয়া, যা পরবর্তীতে কুতুবদিয়া নামে স্বীকৃতি লাভ করে। দ্বীপকে স্থানীয়ভাবে দিয়া বা ডিয়া বলা হয়।

মহেশখালী উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

জনশ্রতি আছে, কোন এক সময় স্থানীয় এক কৃষক বনের মধ্য থেকে এক শিলা-বিগ্রহ উদ্ধার করেন। স্বপ্নযোগে তিনি অবগত হন যে, এটি হিন্দু দেবতা ‘মহেশ’-এর বিগ্রহ। তারপর তিনি একটি মন্দির নির্মান করে সেখানে বিগ্রহটি স্থাপন করেন। এই মহেশ বিগ্রহের নামেই দ্বীপের নামকরণ হয় মহেশখালী।

রামু উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

এই উপজেলা সম্পর্কে নির্ভরযোগ্য কোন তথ্য পাওয়া যায় না । তবে জনশ্রুতি আছে, আরাকানের রাম রাজবংশের নামে এই এলাকার নামকরণ হয়।

উখিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

জনশ্রতি অনুসারে, এই জনপদের নামকরণ হয়েছে উখিয়া নামক এক বিখ্যাত আদিবাসীর নামানুসারে। এই ব্যক্তি খেয়া পারাপারে খুব দক্ষ ছিলেন। খেয়াঘাট সংলগ্ন এই এলাকা উখিয়া ঘাট নামে পরিচিত হয়।

টেকনাফ উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

বলা হয়ে থাকে, টেকনাফ নামটি মারমা আদিবাসী গোষ্ঠীর রাখা । মারমা ভাষার শব্দ ট্যংম্ব বা ট্যংন্ব থেকে টেকনাফ। পাহাড়ের পাদদেশ দিয়ে নাফ নদী প্রবাহিত হওয়ায় সব মিলিয়ে এলাকটি অপভ্রংশে টেকনাফ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

ঈদগাঁও উপজেলার নামকরণ ইতিহাস :

মোগল সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহসুজা সৈন্যসামন্ত নিয়ে ভারতবর্ষ থেকে আরাকান পালিয়ে যাওয়ার সময় তৎকালীন নয়বাদ এলাকায় পৌঁছলে পবিত্র ঈদুল ফিতর সমাগত হওয়ায় এখানে সৈন্যসামন্ত, আমির ওমরা সহ ঈদের নামাজ আদায় করেন। তৎকালীন নয়াবাদ তখন থেকেই ঈদগাঁও নামে পরিচিত লাভ করে।

তথ্যসুত্র: কক্সবাজার জেলা তথ্য বাতায়ন ও অন্যান্য

About Sabuj Vumi Editor

Check Also

বান্দরবান জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস : 

বান্দরবান জেলার নামকরণ ইতিহাস :  বান্দরবান জেলার নামকরণ নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের মতে, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *