Home / নামের ইতিহাস ও কিংবদন্তী / মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

মুন্সীগঞ্জ জেলার নামকরণ ইতিহাস:

আজকের মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রাচীন বাংলার গৌরবময় স্থান বিক্রমপুরের অংশ। মুন্সীগঞ্জে এক সময় ইদ্রাকপুর নামে একটি গ্রাম ছিল। কথিত আছে, মোঘল শাসন আমলে এই ইদ্রাকপুর গ্রামে মুন্সী হায়দার হোসেন নামে একজন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোঘল শাসকদের দ্বারা ফৌজদার নিযুক্ত হয়েছিলেন। অত্যন্ত সজ্জন ও জনহিতৈষী মুন্সী হায়দার হোসেনের নাম অনুসারে ইদ্রাকপুরের নাম হয় মুন্সীগঞ্জ। ১৯৪৫ সালে বৃটিশ ভারতের প্রশাসনিক সুবিধার্থে মুন্সীগঞ্জ থানা ও মহকুমা হিসেবে উন্নীত হয়। ১৯৮৪ সালে ১ মার্চ মুন্সীগঞ্জ জেলায় রুপান্তরিত হয়।

মুন্সিগঞ্জ জেলার উপজেলার নামসমূহ:  শ্রীনগর,  সিরাজদিখান,লৌহজং,টংগীবাড়ী, গজারিয়া ও মুন্সিগঞ্জ সদর।  

শ্রীনগর উপজেলার নামকরণ ইতিহাস:

­ঐতিহ্যবাহী শ্রীনগরের প্রাচীন নাম রায়েসবর নবাব মীর কাসিম কর্তৃক নিযুক্ত বাংলা বিহার উড়িশ্যার গভর্ণর লালা কীর্তি নারায়ন বসু বায়েসবরের শ্রী বৃদ্ধি করে এর নামকরণ করেন শ্রীনগর।

সিরাজদিখান উপজেলার নামকরণ ইতিহাস:

‘সিরাজদিখান’ নামের উৎপত্তি নিয়ে কয়েকটি মত প্রচলিত আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি মত হলো:
প্রথমত:  বিক্রমপুর থেকে প্রকাশিত বাবু গিরিশ চন্দ্র বসু কর্তৃক সম্পাদিত ‘‘জম্মভূমি’’ নামক মাসিক পত্রিকার সিরাজদৌল্লা শীর্ষক এক ধারাবাহিক প্রবন্ধ হতে জানা যায় যে, নবাব সিরাজউদৌল্লা তার পিতা কে নেয়ার জন্য একবার বিক্রমপুর এসেছিলেন এবং পাথরঘাটা (সিরাজদিখান) এলাকা দিয়ে গমন করেন। তাঁর নামানুসারে ‘‘সিরাজদিখান’’ নামকরণ হয়।
দ্বিতীয়ত: সম্রাট জাহাংগীরের রাজত্বকালে সিরাজদিখানের পার্শ্বস্থ রাজদিয়া গ্রামের খান বংশের আদিপুরুষ সুজাত আলী খান ইছামতি নদী সংলগ্ন রাজদিয়া গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। সম্রাটের শাহী ফরমানে এখানে বসবাসের উদ্দেশ্য ছিলো পূর্ববঙ্গে আরাকানী মগ দস্যুদের জলপথে আক্রমন প্রতিহত করা এ বংশের চতুর্থ পুরুষ সিরাজউদ্দিন খান ছিলেন স্বাধীনচেতা অত্যান্ত আল্লাহ ভক্ত মানুষ । এক সময় তিনি সংসার বিরাগী হয়ে দেশত্যাগ করে ত্রিশ বছর বিভিন্ন স্থানে গমন করে কামিলিয়াত হাসিল করার পর ইছামতি নদীর তীরবর্তী এক জঙ্গল জায়গায় আস্তানা স্থাপন করেন। চারজন সহচরসহ তিনি তথায় আল্লাহর এবাদতে মগ্ন থাকতেন। সিরাজউদ্দিন খানের মৃত্যুর পর তার নামানুসারে এ এলাকাটির নাম ‘‘সিরাজদিখান’’ রাখা হয়।

আরো পড়ুন:  বাংলাদেশের ৬৪ জেলা উপজেলা সহ বিভিন্ন স্থানের নামের ইতিহাস

লৌহজং উপজেলার নামকরণ ইতিহাস:

অধিকাংশের ধারনা লৌহজং শব্দটির উৎপত্তি হলো  লৌহ ও জংশন শব্দ দু’টির সংযোগে । লৌহজং এর দিঘলী বাজারে একসময় কলকাতা হতে নৌপথে লৌহসামগ্রী আমদানি হতো। এখানে লৌহজাত সামগ্রীর ব্যবসা এতই প্রসার লাভ করেছিল যে, এই অঞ্চল ‘লোহালক্কড় ব্যবসা জংশনে’ পরিণত হয়েছিল বলে জানা যায়। এই লোহা এবং জংশন এর সমন্বয়ে লৌহজং নামের উৎপত্তি। 

টংগীবাড়ী উপজেলার নামকরণ ইতিহাস:

প্রাকৃতিকভাবে টংগিবাড়ী নীচু এলাকা বিধায় মানুষজন মাটি কেটে ক্ষুদ্রাকার দ্বীপের মতো বানিয়ে অনেকটা টং দোকানের মতো বাড়ী নির্মান করতো। টং সদৃশ স্থানে বাড়ী নির্মিত হওয়ায় কালক্রমে স্থানের নামকরণ হয় টংগিবাড়ী।

গজারিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস:

এই উপজেলার নামকরণ সম্পর্কে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। ব্রিটিশ আমলের শেষ সময় পর্যন্ত লোকে এ এলাকাকে চিনত ‘ফুলদী গজারিয়া’ হিসেবে।

তথ্যসুত্র: জেলা তথ্য বাতায়ন   ,  বাংলা নিউজ২৪

About Sabuj Vumi Editor

Check Also

ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

ঝিনাইদহ জেলার নামকরণ ইতিহাস: জনশ্রুতি আছে প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর পশ্চিম দিকে নবগঙ্গাঁ নদীর ধারে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Flag Counter