Home / নামের ইতিহাস ও কিংবদন্তী / বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

বরিশাল জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

বরিশাল জেলার ইতিহাস ও পটভুমিঃ

 প্রাচীন কালে বরিশাল বাঙ্গালা নামে পরিচিত ছিলো। কালের বিবর্তনে এই বাঙ্গালা শব্দটি বাকলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। শোনা যায় ডঃ কানুনগো নামক এক ব্যক্তি বাকলা বন্দর নির্মাণ করেন। এ সামুদ্রিক বন্দরে আরব ও পারস্যের বণিকেরা বাণিজ্য করতে আসতেন। দশম শতকে দক্ষিণ পূর্ববঙ্গে চন্দ্র রাজবংশ চন্দ্রদ্বীপ নামে একটি রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। বাকলা ছাড়াও চন্দ্রদ্বীপের অংশ ছিলো বর্তমান মাদারীপুর,গোপালগঞ্জ এবং বাগেরহাট জেলার অংশবিশেষ। চতুর্দশ শতকে সমগ্র বাংলাদেশ যখন মুসলমানদের দখলে তখন দনুজমর্দন দেব এই অঞ্চলে একটি স্বাধীন রাজ্য স্থাপন করেন যা বাকলা-চন্দ্রদ্বীপ নামে পরিচিত ছিলো। ১৭৯৭ সালে এখানে বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়।  ১৮০১ সালে এই জেলার সদর দপ্তর গিরদে বন্দরে (বর্তমান বরিশাল শহর) স্থানান্তর করা হয়।

বরিশালের নামকরণ সম্পর্কে অনেক মতভেদ আছে। বড় বড় শালগাছের কারণে (বড়+শাল)= বরিশাল; পর্তুগীজ বণিক বেরী ও শেলীর প্রেম কাহিনী থেকে বরিশাল; বড় বড় লবণের গোলার জন্য বরিশাল ইত্যাদি। গিরদে বন্দরে (গ্রেট বন্দর) ঢাকার নবাবদের বড় বড় লবণের চৌকি ছিল। এ জেলার লবণের বড় বড় চৌকি ও বড় বড় দানার জন্য ইংরেজ এবং পর্তুগীজ বণিকরা এ অঞ্চলকে ‘‘বরিসল্ট’’ বলত। এ বরিসল্ট পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল হয়েছে বলেও অনেকের ধারণা।

বরিশালের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনুধাবন করে তদানীমত্মন বৃটিশ সরকার ১৯১৩-১৪ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল ডিষ্ট্রিক্ট আ্যডমিনিষ্ট্রেশন রিপোর্টে ফরিদপুর ও খুলনা জেলাসহ বরিশাল বিভাগ প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি বরং বরিশাল খুলনা বিভাগের অংশে পরিণত হয়। পাকিস্তান আমলে বরিশালসহ এই জেলায় মোট ছয়টি মহকুমা ছিলো। পাকিস্তান আমলেই পটুয়াখালী মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮৪ সালে বাকি চারটি মহকুমা জেলায় রূপান্তরিত হয় এবং বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলা ও ঝালকাঠী এই ছয়টি জেলা নিয়ে ১৯৯৩ সালের ১লা জানুয়ারি বরিশাল বিভাগের কার্যক্রম শুরু হয়।    বাংলার শস্য ভান্ডার বরিশাল এক সময় ‘‘এগ্রিকালচারাল ম্যানচেষ্টার’’ হিসেবে পরিচিত ছিল। বরিশালের অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল বাংলার অর্থনীতি। পলি গঠিত উর্বর এ অঞ্চল ছিল কৃষির জন্য উৎকৃষ্ট এবং বসবাসের জন্য উত্তম। কৃষিই ছিল অর্থনীতির মূল উৎস। পর্যটক রালফ ফিস ১৫৮০ সালে বাকলাকে অত্যন্ত সম্পদশালী আখ্যায়িত করে এখানকার চাল, কার্পাস, রেশম বস্ত্র ও সুবৃহৎ ঘরের কথা উল্লেখ করেছেন।    ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ অঞ্চলের মানুষ অসামান্য সাহসিকতার সাথে পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বাংলাদেশের সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের মধ্যে  বীরশ্রেষ্ঠে ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার এবং বীরশ্রেষ্ঠে সিপাহী মোস্তফা কামাল ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার সন্তান। যুদ্ধকালীন সময়ে নৌ-পথে হেমায়েত বাহিনীর বীরত্ব গাঁথা ইতিহাসে আজও উজ্জ্বল হয়ে আছে।      বরিশাল অঞ্চল ১৮০০ সাল পর্যন্ত হিন্দু অধ্যুষিত ছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসলমানদের আগমন, ধর্মান্তর এবং হিন্দুদের ব্যাপকহারে দেশ ত্যাগের ফলে মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য ঘটে। বর্তমানে এখানে কিছু সংখ্যক খৃষ্টান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মানুষও বসবাস করে। প্রাচীনকালে বরিশালে ‘‘চন্দ্রভদ্র’’ নামে এক জাতির বাস ছিল। বর্তমান নমঃশুদ্ররা তাঁদেরই বংশধর। সামাজিক আচার অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রেখে পটুয়াখালীর দক্ষিণ অঞ্চলে একটি জাতিগোষ্ঠী বাস করে, যারা রাখাইন নামে পরিচিত।

বরিশাল জেলা ও বিভিন্ন স্থানের নামকরণঃ

বরিশাল নামকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, পূর্বে এখানে খুব বড় বড় শাল গাছ জন্মাতো, আর এই বড় শাল গাছের কারণে (বড়+শাল) বরিশাল নামের উৎপত্তি। কেউ কেউ দাবি করেন, পর্তুগীজ বেরি ও শেলির প্রেমকাহিনীর জন্য বরিশাল নামকরণ করা হয়েছে।  অন্য এক কিংবদন্তি থেকে জানা যায় যে, গিরদে বন্দরে (গ্রেট বন্দর) ঢাকা নবাবদের বড় বড় লবণের গোলা ও চৌকি ছিল। ইংরেজ ও পর্তুগীজ বণিকরা বড় বড় লবণের চৌকিকে ‘বরিসল্ট’ বলতো। অথাৎ বরি (বড়) + সল্ট (লবণ)= বরিসল্ট।  আবার অনেকের ধারণা এখানকার লবণের দানাগুলো বড় বড় ছিল বলে ‘বরিসল্ট’ বলা হতো।  পরবর্তিতে বরিসল্ট শব্দটি পরিবর্তিত হয়ে বরিশাল নামে পরিচিতি লাভ করে।

বরিশাল জেলার উপজেলা সমুহঃ 

বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর , বানারীপাড়া, গৌরনদী, আগৈলঝাড়া, মেহেন্দিগঞ্জ, মুলাদী , হিজলা।

বাকেরগঞ্জ উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

স্বাধীন বাংলার নবাব আলীবর্দী খানের আমলে বুজুর্গ উমেদপুরের জমিদার ঢাকার আগা বাকের খান এ অঞ্চলে ১৭৪১ খ্রিঃ নিজ নামে গঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন তাঁর নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম রাখা হয় বাকেরগঞ্জ ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী আমল১৭৯৭ খ্রিঃ বাকেরগঞ্জ জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮০১ সালে জেলা সদর বাকেরগঞ্জ থেকে বরিশালে স্নানান্তর করা হয় বাকেরগঞ্জ জেলা নামটি ১৭৯৭  থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ছিল।  ১৯৯৩ সালে বরিশাল বিভাগ সৃষ্টির ফলে বাকেরগঞ্জ   নামটি  জেলা থেকে বাদ দেয়া হয়।   জেলা সদর বরিশালের নামে বিভাগের নামকরণ  করা হয়। আগা বাকের খান এর স্মৃতি বিজড়িত বাকেরগঞ্জ নামটি বর্তমানে বাকেরগঞ্জ  উপজেলাতেই  সীমাবদ্ধ রয়েছে।

বাবুগঞ্জ উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

বাবুগঞ্জ নামকরণ সম্পর্কে র্নিভরযোগ্য ইতিহাস পাওয়া না গেলেও ইতিহাস বর্ণনায় জানা যায়, আজ থেকে ৪০০ বছর আগে এ অঞ্চলে বসবাসরত বেশ ক’জন হিন্দু জমিদার তাদের প্রয়োজনে বাবুগঞ্জ উপজেলা সদরের বর্তমান বাজারটি মেলায়।ঐ সময়ে এ অঞ্চলের লোকজন জমিদারদের বাবু বলে সম্বোধন করতো।আর বাজারটিকে তারা অভিহিত করতো গঞ্জ বলে।ফলে জমিদার বাবুদের মেলানো গঞ্জ থেকে এ এলাকার নাম হয় বাবুগঞ্জ।অন্য এক তথ্যানুসারে বলা হয় যে, যশোর পরগনার জমিদার ‘ বাবু বিরাজ রায় চৌধুরী’ এই অঞ্চল প্রাপ্ত হয়ে এখানে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র (গঞ্জ) প্রতিষ্ঠা করেন। বাবু বিরাজ রায় চৌধুরীর নামানুসারে এলাকার নাম হয় বাবুগঞ্জ।

উজিরপুর উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

কিংবদন্তী থেকে জানা যায়, পতুর্গীজ আমলে উজির-আল-মামুন নামে এক জলদস্যু শেখের বাগ এলাকায় বাস করতো। সেখান থেকেই সে সন্ধ্যা নদীতে দস্যুতা করে বেড়াতো। তার নাম অনুসারে গ্রামের নাম হয় উজিরপুর। আবার উজিরপুর নামকরণেল ক্ষেত্রে সাধারণ ধারণা, ‘ফকির মোহাম্মদ’ নামে মুর্শিদাবাদ নবাবের এক উজির এই অঞ্চলে দীর্ঘকাল ধরে বসবাস করতেন। এই উজিরের নাম থেকে এলাকার নাম হয় উজিরপুর।

গৌরনদী উপজেলার নামকরণ ইতিহাস ঃ

‘‘গৌরনদী’’ র নামকরন নিয়ে সুনিদৃষ্ট কোন লিখিত ইতিহাস নেই। ‘‘গৌরনদী’ র নামকরন সম্পর্কে প্রবীনদের কাছ  থেকে পাওয়া তথ্যই মানুষ জানে এক সময় গৌরনদী সদরসহ বৃহত্তর গৌরনদী (আগৈলঝাড়াসহ) র গোটা এলাকা  ছিল নদী দ্বারা বেষ্ঠিত।  গৌরনদীর পূর্বাঞ্চলে রয়েছে আড়িয়াল নদী।  আর আড়িঁয়াল খার শাখা নদী হচ্ছে পালরদী নদী।এক সময় পালরদী ছিল স্রোতস্বীনি নদী গৌরনদীর  প্রবীনজন ও ইতিহাসবিদদের  সংজ্ঞা মতে,  আড়িঁয়াল খাঁ নদীর  শাখা নদী পালরদী নদীকে ঘিরেই গৌরনদীর নামকরন করা হয়। এ নদীর সাথে গৌরনদীর সংযুক্ততা রয়েছে।আড়িঁয়াল খাঁ  নদীর শাখা নদী  পালরদী নদীর প্রবাহমান পানির রং ছিল গৌড় বর্নের অনুসারে গৌড়্ওবং নদী যুক্ত হয়ে  ‘‘গৌরনদী’ র নামকরন করা হয়েছে গৌরনদী কলেজের প্রতিষ্ঠতা অধ্যক্ষ মোঃ তমিজউদ্দিন ও গৌরনদীর  ইতিহাস লেখক প্রফেসর  মোসলেম উদ্দিন সিকদারের একাধিক লেখায় গৌরনদীর নামকরনের আদী ইতিহাস হিসেবে এ তথ্যের উল্লেখ্য রয়েছে। রবরিশালের ইতিহাস লেখক সিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ তার বইয়ে নদীর নামানুসারে  গৌরনদীর নামকরনের কথা উল্লেখ করেছেন।

আগৈলঝাড়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

সতের শতকে নবাব আলী খাঁর আমলে তাঁর এক সুবাদার ছবি খাঁ এ পরগনার (আগৈলঝাড়া, গৌরনদী, উজিরপুর, কোটালীপাড়া)কিয়দংশের দায়িত্বে থাকাকালে প্রজা শাসনের পাশাপাশি কিছু জনহিতকর কাজ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনি পরগণার ভেতর দাস শ্রমিকদের দিয়ে এক রাতের মধ্যে একটি দিঘি খনন করাতেন। দিঘি খনন শেষে শ্রমিকরা নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের আগৈল (মাটি কাটার ঝুড়ি) ঝাড়তো। সেখানে একটি মাটির টিবি গড়ে উঠে এবং ক্রমান্বয়ে তার কলেবর বৃদ্ধি পায়। ফুল্লশ্রীর এক অংশে লোকালয় গড়ে উঠলে তার নামকরণ করা হয় আগৈলঝাড়া।

মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

অনুমান করা হয়, আগা বাকেরের সময়ে ‘মেহেন্দী খান’ নামে তাঁর এক প্রতিনিধি এই এলাকায় এসে একটি বাণিজ্য কেন্দ্র (গঞ্জ) গড়ে তোলেন। তার নামানুসারে এলাকার নাম হয় মেহেন্দীগঞ্জ। এছাড়া বলা হয়ে থাকে, আগা বাকেরের এক পুত্রের নাম ছিল মেহেদী খান, যার নাম থেকেও মেহেন্দীগঞ্জ নামকরণ হতে পারে।

মুলাদী উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

মুলাদী উপজেলার ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, ‘মুলাই খান’ নামক এক বিখ্যাত দরবেশ এ্ই অঞ্চলে বাস করতেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় কাজের জন্য এই এলাকায় খুবই বিখ্যাত ছিলেন মনে করা হয়। মনে করা হয়, এই মুলাই খানের নামানুসারে এই জনপদের নাম হয়েছে মুলাদী। মুলাদীর ‘দী’ শব্দাংশটি সম্ভবত দ্বীপ হতে। বর্তমান মুলাদী উপজেলা বিশাল বিশাল নদী বেষ্টিত দ্বীপসদৃশ একটি ভূখন্ড। এই ভূখন্ডে মুলাই খান ইসলাম প্রচারের জন্য এসে আস্তানা স্থাপন করতে তা ‘মুলাই দ্বীপ’ নামে পরিচিতি পায় এবং লোকমুখে বিবর্তিত ও সংক্ষিপ্ত হয়ে মুলাদ্বীপ এবং তা হতে বর্তমান মুলাদী রুপলাভ করেছে। এছাড়া ‘দী’ শব্দটি ডিহি শব্দের অপভ্রংশ হতে পারে। একসময় (1922 সালের পূর্বে) কয়েকটি মৌজা নিয়ে একটি তৌজি এবং কয়েকটি তৈৗজি নিয়ে একটি ডিহি গড়ে উঠতো। আজকের মুলাদী একসময় একটি ডিহি ছিল এবং তা মুলাই খানের নামানুসারে মুলাই ডিহি নামে পরিচিত ছিল। পরে লোকমুলে পরিবর্তিত হয়ে মুলাদী নাম ধারণ করা অস্বাভাবিক নয়।

হিজলা উপজেলার নামকরণ ইতিহাসঃ

জনশ্রুতি থেকে জানা যায়, এই অঞ্চল হিজল গাছে আচ্ছাদিত ছিল। এই হিজল গাছ থেকে হিজলা নামের উদ্ভব বলে ধারণা করা হয়।

বরিশাল জেলার উপজেলা ও ইউনিয়ন সমুহঃ 

বরিশাল সদর উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ  রায়পাশা-কড়াপুর, কাশিপুর,ন চরবাড়িয়া, শায়েস্তাবাদ, চরমোনাই, জাগুয়া, চরকাউয়া, চাদপুরা, টুঙ্গীবাড়ীয়া, চন্দ্রমোহন

বাকেরগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ খাঞ্জাপুর, বার্থী, চাদশী, নলচিরা, মাহিলারা, বাটাজোর
সরিকল।

বাবুগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ আগরপুর, কেদারপুর, দেহেরগতি, চাঁদপাশা, রহমতপুর, মাধবপাশা

উজিরপুর উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃসাতলা, হারতা, জল্লা, ওটরা, শোলক, বড়াকোটা, বামরাইল, শিকারপুর-উজিরপুর, গুঠিয়া

বানারীপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ বিশারকান্দি, ইলুহার, সৈয়দকাঠী, চাখার, সালিয়াবাকপুর, বাইশারি, বানারীপাড়া, উদয়কাঠী

গৌরনদী উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ খাঞ্জাপুর, বার্থী, চাদশী, নলচিরা, মাহিলারা, বাটাজোর, সরিকল

আগৈলঝাড়া উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ রাজিহার, বাকাল, বাগধা, গৈলা, রত্নপুর

মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ আন্দারমানিক, লতা, চরএক্করিয়া, উত্তর উলানিয়া, দক্ষিণ উলানিয়া, মেহেন্দিগঞ্জ, বিদ্যানন্দপুর, ভাষানচর, চরগোপালপুর, জাঙ্গালিয়া, আলিমাবাদ, চানপুর, দরিরচর-খাজুরিয়া, গোবিন্দপুর, শ্রীপুর, জয়নগর

মুলাদী উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ বাটামারা, নাজিরপুর, ছবিপুর, গাছুয়া, চরকালেখা, মুলাদী, কাজীরচর

হিজলা উপজেলার ইউনিয়ন সমুহঃ বড়জালিয়া, গুয়াবাড়িয়া, ধুলখোলা, হিজলা-গৌরবদি, মেমানিয়া, হরিনাথপুর

বরিশাল জেলার নদনদী সমুহঃ 

বাংলাদেশের যে-সব ভূখণ্ড সৃষ্টিতে নদ-নদীর অবদান এককভাবে স্বীকৃত, বৃহত্তর বরিশাল নিঃসন্দেহে তাদের মধ্যে অন্যতম। সেই প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে এখানকার নদীগুলোর জালের মতো ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য শাখা-প্রশাখা প্রতিনিয়ত পলি বহন করে সৃষ্টি করে চলেছে অপরূপ এই ভূখণ্ডটিকে।

বরিশালের উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা নিচে দেওয়া হলো:

মেঘনা: বরিশালের সর্ববৃহৎ নদীটি হলো মেঘনা। জন্মলগ্ন থেকে চলার পথে এই প্রমত্তা নদী দুই কূলের অসংখ্য স্থানের ভূখণ্ড গ্রাস করে নিয়েছে বলে এর বরিশাল অংশের তীরে কোনো উল্লেখযোগ্য জনপদ গড়ে ওঠেনি।

তেঁতুলিয়া: মেঘনার যে শাখা নদী ভোলার পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে ছুটে গেছে সমুদ্রের দিকে, সেই স্রোতধারাই তেঁতুলিয়া নামে খ্যাত। এ নদীটিও তার উৎস নদীটির মতো কূল ভাঙানিয়া হিসেবে পরিচিত।

ইলিশা: মেঘনার এই শাখা নদী মেহেন্দীগঞ্জ পর্যন্ত ইলিশা নামে প্রবাহিত।

আড়িয়াল খাঁ: প্রাচীনকাল থেকেই দক্ষিণাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য নদীগুলোর মধ্যে আড়িয়াল খাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। বহু শাখা-প্রশাখা সমৃদ্ধ আড়িয়াল খাঁ দৈঘ্যে মাত্র ত্রিশ মাইল হলেও নানা কারণে এই নদীটি স্বতন্ত্র পরিচয়ে এখনো প্রবাহিত হয়ে চলেছে।

কীর্তনখোলা: এই নদীটির তীরেই অবস্থিত বরিশাল শহর। এর দৈর্ঘ্য মাত্র পনেরো মাইল নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী অংশে কীর্তনখোলা বিভিন্ন নামে পরিচিত হয়ে সাগরে পতিত হয়েছে।

হিজলা: বরিশালের উত্তর প্রান্তের পনেরো মাইল দীর্ঘ নদীটি হিজলা নদী নামে পরিচিত।বাকেরগঞ্জ: পঁচিশ মাইল দৈর্ঘ্যের এই নদীটি বাকেরগঞ্জ অঞ্চলে প্রবাহিত।কালিজিরা: বরিশাল শহরের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এ নদীটির দৈর্ঘ্য দশ মাইল।সন্ধ্যা: বানারীপাড়া-স্বরূপকাঠি সংলগ্ন পাঁচ মাইল দৈর্ঘ্যের নদীটির নাম সন্ধ্যা।

তথ্যসূত্র: বরিশালের ইতিবৃত্ত, সাইফুল আহসান বুলবুল, গতিধারা, ঢাকা, এপ্রিল ২০০৯।

 

About Sabuj Vumi Editor

Check Also

ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন স্থানের নামকরণ ইতিহাস

ঝিনাইদহ জেলার নামকরণ ইতিহাস: জনশ্রুতি আছে প্রাচীনকালে বর্তমান ঝিনাইদহের উত্তর পশ্চিম দিকে নবগঙ্গাঁ নদীর ধারে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Flag Counter